এখন ভুল বুঝলেও ভেসে যাবে সব

প্রকাশের সময় : 2019-01-31 12:36:02 | প্রকাশক : Admin
এখন ভুল বুঝলেও ভেসে যাবে সব

সিমেক ডেস্কঃ মাহাথীর মোহাম্মদ যে বছর মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন (১৯৮১), সে বছর মালয়শিয়ার এউচ ছিল মাত্র ১২ বিলিয়ন ডলার। আর যে বছর দায়িত্ব ছাড়েন সে বছর (২০০৩) ছিল ২১০ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় ৩০০০ ডলার, সাউথ ইস্ট এশিয়ার তৃতীয় সর্বোচ্চ মাথাপিছু ইনকাম।

মাহাথীরের এই দীর্ঘ সাফল্যের রহস্যটা কি? এটা কি মাহাথীর এলো, মাহাথীর দেখলো আর মাহাথীর জয় করল এমন কিছু ছিল? আজ্ঞে না। আমরাতো মুখে মুখে বলে ফেলি, আমরা মাহাথীরের মত লিডার চাই, কিন্তু মাহাথীর মোহাম্মদের সময়ে মালয়শিয়ার এই ধারাবাহিক উন্নতির পেছনে মূল যে কারণ ছিল সেইটা ছিলো controlled democracy; নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র।

১৯৮০ তে মালয়শিয়াতে মাহাথীর যখন ক্ষমতায় আসে মালয়শিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক কথায় ছিলো টোটাল ক্যাওস। হরতাল, মিছিল, মিটিং লেগেই থাকত। ফ্রিডম অফ স্পিচের নামে মানুষ কাজ কাম বাদ দিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকত পলিটিকাল তর্কাতর্কিতে।

মাহাথির বিশ্বাস করতেন, এই যে নানা ধর্মের, নানা মতের মালয়শিয়াকে একটি স্টেবল মালয়শিয়া বানাতে যারা দেশে রাজনীতির নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটায় তাদেরকে জেলের ভিতরে ঢুকাতে হবে। যা ভাবলেন তাই করলেন মাহাথীর। ১০৬ জন বিরোধী দলীয় নেতাকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর দায়ে জেলে ঢুকালেন।

কোন আইনে ঢুকালেন? মাহাথীরের পাশ করা অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা আইন বা Internal security act দ্বারা। ক্ষোভে ফেটে পড়ল বিরোধী দল এবং মিডিয়াগুলো। মাহাথীর এবার নিয়ে পড়লেন মিডিয়াগুলোর পেছনে। প্রতিটি প্রাইভেট এবং সরকারি নিউজ পেপারে সেন্সর জারি করা হলো। জাতীয় পর্যায়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয় এমন কোন নিউজ করা যাবেনা।

যখন হিউম্যান রাইটস গ্রুপগুলো মাহাথীরকে প্রশ্ন করত, where is our freedom? মাহাথীর উত্তর দিত, "Free for whom? For rogue speculators. For anarchists wanting to destroy weak countries in their crusade for open societies." এদিকে পশ্চিমা বিশ্ব তখন মাহাথীরের পিছে লেগে গেছে! মালয়শিয়ার মানুষের মানবাধিকার নাই ,ফ্রিডম অফ স্পিচ নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। মালয়শিয়াতে তখন সি আই এর এজেন্ট এনজিওগুলোর কাজই ছিল বিভিন্ন জরিপ, প্রতিবেদন ইত্যাদি প্রকাশ করে এইটা প্রমাণ করার চেষ্টা করা; মাহাথীর মোহাম্মদ ইজ আ ডিকটেটর। মালয়শিয়ায় কোন গণতন্ত্র নাই।

কিন্তু মাহাথীর মোহাম্মদ তার লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল একটি পলিটিক্যালি স্টেবল ডেভেলপড মালয়শিয়া। ক্ষমতা গ্রহনের প্রথমে দশবছরে মাহাথীর মোহাম্মদকে ভুল বুঝেছিল দেশের মানুষও। হিউম্যান রাইটস, ফ্রিডম অফ স্পিচের ধুয়াতে বিশ্বাস করেছিল অনেকেই। কিন্তু মাহাথীরের লং টাইম প্ল্যানিং ই শেষ পর্যন্ত সফল হলো।

পলিটিকাল ইনডিসিপ্লিন মালয়শিয়া কন্ট্রোল্ড ডেমোক্রেসিতে আজাইরা রাজনীতিতে বিজি না থেকে পরিশ্রম করে কাজ করে আজকের আধুনিক মালয়শিয়াতে পরিণত হয়েছে। এখন আর ফ্রিডম অফ স্পিচের লোকদের পাওয়া যায়না। তারা মাহাথীরের উন্নয়নের স্রোতে গর্তে লুকাইছে।

ঠিক সেইম কেসটাই ছিল শেখ হাসিনার সামনে। ২০০৮ এ যখন ক্ষমতায় আসল বাংলাদেশ তখন শুন্য রিজার্ভের, ৬ ঘন্টা লোডশেডিং আর টেকনোলজিলেস বাংলাদেশ। এদিকে মাহাথীরের মালয়শিয়ায় যেমন দেশকে অস্থিতিশীল করে দেয়ার মত বিরোধীদল ছিল, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে তেমন পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পোড়ান দল আছে, যে দলকে শেখ হাসিনা শক্ত হাতে সামলেছেন।

মজার ব্যাপার হলো, মাহাথীর মোহাম্মদ মিডিয়া সেন্সর করতেন। আর শেখ হাসিনা অন্তত ১০-১৫ টা নতুন চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছেন। থাকুক সমালোচনা। দেশ আগাবেই। মাহাথীর মোহাম্মদ এক সময় মিটিং মিছিল নিষিদ্ধ করেছিলেন। শেখ হাসিনার সরকারের সময় কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হয়েছে। সরকার দাবি মেনেও নিয়েছে।

মাহাথীর মোহাম্মদের ডেমোক্রেসিকে কন্ট্রোল্ড ডেমোক্রেসি বলা হলে, শেখ হাসিনার ডেমোক্রেসিকে আমি বলব প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেসি। প্রগতিশীল গণতন্ত্র। ২০০৮ এ দায়িত্ব নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার লিডারশীপে আজ এই পর্যায়ে এসেছে।

যদিও এ দেশে পশ্চিমা দেশগুলোর চর ধান্দাবাজ অনেক এনজিও সেটা মানতে নারাজ। তারা চায় বাংলাদেশ আবার কাজ কর্ম বাদ দিয়ে মিটিং মিছিল জ্বালাও পোড়াও শুরু করুক। আজ্ঞে না। এদেশের মানুষ বুঝে গেছে দেশের উন্নতিতে নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক পরিবেশে জাতি হিসেবে পরিশ্রমের বিকল্প নাই।

এখনো অনেক দুর যাওয়ার বাকি। শেখ হাসিনাই হবে নেক্সট মাহাথীর মোহাম্মদ। যাকে একসময় ভুল বুঝলেও যার উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাবে সব প্রশ্ন। এখন আমাদের উচিত শেখ হাসিনার উপর বিশ্বাস রাখা। যে বিশ্বাস মালয়শিয়ার জনগণ একদিন মাহাথীরের উপর রেখেছিল।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com