শিক্ষকের সন্তান থেকে শীর্ষ রাজনীতিবিদ

প্রকাশের সময় : 2019-03-27 18:10:50 | প্রকাশক : Administration
শিক্ষকের সন্তান থেকে শীর্ষ রাজনীতিবিদ

সিমেক ডেস্কঃ শীর্ষ রাজনীতিবিদ অসুস্থ হয়ে বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়কপরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার অসুস্থতায় গোটা দেশবাসী রয়েছেন উদ্বেগ- উৎকণ্ঠায়। তবে আশার কথা হচ্ছে, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই রাজনীতিকের।

এঅবস্থায় ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে জানার আগ্রহ রয়েছে বহু মানুষের মাঝে। যদিও তার জীবন একটি খোলা কিতাবের মতো। আসুন জেনে নেই ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত জীবন এবং একজন শিক্ষকের সন্তান থেকে যেভাবে তিনি হয়ে উঠলেন শীর্ষ রাজনীতিবিদ।

১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। বাবা মোশারফ হোসেন কলকাতা ইসলামি কলেজে পড়াশোনা করেছেন যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন। কর্মজীবনে মোশারফ হোসেন জনসেবার জন্য সরকারি চাকুরি ছেড়ে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশা বেছে নেন। যিনি কর্মজীবনের বসুরহাট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে  ১৯৯৩ সালের ২৩ জুলাই ইন্তেকাল করেন। মা ফজিলাতুন্নেসা গৃহিনী। ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর নাম ইসরাতুন্নেসা। তিনি একজন আইনজীবী। কোনো সন্তান নেই এই দম্পতির।

ওবায়দুল কাদের কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা ওবায়দুল কাদের ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণঅভুত্থান এবং ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নিজ এলাকা কোম্পানিগঞ্জ ফিরে গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে জীবনের বিভিন্ন সময়ে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেছেন। এরমধ্যে ১৯৭৫ এর পর এক নাগাড়ে দীর্ঘ আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরপর দুইবার ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং যুব ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিয়ক মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ২০০২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরের কাউন্সিলে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়ামে ঠাঁই পান তিনি।

এ পদে থাকার সময়ই তিনি এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ মার্চ গ্রেফতার হন। ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হন। কারাগারে থাকাকালে কারাজীবনের বর্ণনা দিয়ে ‘অনুস্মৃতি: যে কথা বলা হয়নি’ লেখেন।

তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর পুনরায় দ্বিতীয়বারের মত নোয়াখালী-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১২ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী হন তিনি। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি ২০১৬-২০১৯ মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

রাজনীতি ছাড়াও ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা ও লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। জীবনের অনেক চড়াই উৎরাই গেলেও লেখালেখি ছাড়েননি। ওবায়দুল কাদেরের রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৯টি।

আজন্ম এই দেশ প্রেমিকের জীবনে আরো অনেক কিছুই হয়তো দেবার আছে দেশকে। তাই পিয় নেতা, ‘ফিরে আসুন সুস্থ হয়ে, প্রিয় দেশ-প্রিয় মানুষদের ভিড়ে’।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com