মাথাপিছু আয় ১৫ গুণ বেড়েছে
প্রকাশের সময় : 2019-04-11 17:32:45 | প্রকাশক : Administration
সিমেক ডেস্কঃ বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশ এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ। সরকারের সর্বশেষ তথ্যানুসারে আগামী জুন শেষে দেশের প্রত্যেক মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১ হাজার ৯০৯ ডলারে। কিন্তু ১৯৭২ সালে এর পরিমাণ ছিল ১২৯ ডলার। এ হিসাবে স্বাধীনতার পর গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৫ গুণ বেড়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বিশ্বে ৩৩তম। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দুটি কারণ। প্রথমত, পাকিস্তান থেকে রাজনৈতিক মুক্তি এবং দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক মুক্তি। পাকিস্তান আমলে উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল এ দেশ। তাদের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বেশি। এটি অত্যন্ত সম্ভাবনার দিক। আর এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের রোড মডেল।
জানতে চাইলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, জাতি হিসেবে বাঙালি অনেক মেধাবী। কিন্তু পাকিস্তান সরকার কোনো সুযোগ দেয়নি। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। ৪০ শতাংশ খাদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। কিন্তু খাদ্য আমদানি করতে হয় না। এ ছাড়া শিল্প খাতের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে গার্মেন্ট শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। চীনের পরেই আমাদের অবস্থান। একই অবস্থা সেবা খাতেও। তার মতে, বৈষম্যের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে আমাদের পিছিয়ে রাখা হয়েছিল।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় কত ছিল তার স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। যুদ্ধকালীন সময়ে এ ধরনের পরিসংখ্যান তৈরির কাজও হয়নি। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার। আর আগামী জুন শেষে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলারে উন্নীত হবে বলে সরকারি তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে মাথাপিছু আয় ১৫ গুণ বেড়েছে।
অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে দেশের মোট কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের উৎপাদনের সঙ্গে রেমিটেন্স (প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ) যোগ করে মোট আয় বের করা হয়। এই মোট আয়কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে মাথাপিছু আয় পাওয়া যায়। এ হিসাবে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রেমিটেন্সের বড় ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে তিন বছর আগে ২০১৫-১৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৪৬৬ ডলার। এ হিসাবে দু’বছরে আয় বেড়েছে ৪৪৩ ডলার। শতকরা হিসাবে যা প্রায় ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা ২৭৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় সামষ্টিক অর্থনীতিতে আমাদের স্থিতিশীলতা সন্তোষজনক। বিখ্যাত সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস ১১টি উদীয়মান দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশ রয়েছে এ তালিকায়। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার মাত্র চার দশকেই বাংলাদেশ অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বিস্ময়করভাবে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ১৯৭১ সালে শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে দেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। -সূত্রঃ যুগান্তর