যে শহরে কোন রাস্তা নেই

প্রকাশের সময় : 2018-05-11 15:14:40 | প্রকাশক : Admin
যে শহরে কোন রাস্তা নেই

সিমেক ডেস্কঃ পৃথিবীতে এমন এক শহর রয়েছে যেখানে কোন রাস্তাই নেই। যে শহরে সব রাস্তা পানি দিয়ে তৈরি। নিঃশ্চই খুব অবাক হবেন। কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নেই। নেই কোনো যানজট, ভিড়ভাট্টা আর শহরের অবাক ব্যস্ততা। ভাবছেন এও কি সম্ভব!

ইউরোপের দেশ হল্যান্ডের ছোট্ট একটি শহর গেইথর্ন। শহরটির বাসিন্দারা যাতায়াতের জন্য সম্পূর্ণ নির্ভর করেন জলপথের ওপর। শহরের প্রতিটা বাড়ির সামনে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে খাল কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যাতে সবাই নৌকায় করে যাতায়াত এবং মালামাল পরিবহনের কাজটা সারতে পারেন। আর্থিক সক্ষমতা থাকার পরও শহরবাসীদের কারো গাড়ি কেনার উপায় নেই। কারণ কোনো রাস্তাই তো নেই গেইথর্নে।

নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামের ৭৫ মাইল উত্তরের গিথুর্ন শহরে ১৮০টি কাঠের সেতুর মাধ্যমেও শহরের আন্তঃযোগাযোগ রক্ষা করা হয়। মালামাল পরিবহন, হেঁটে চলার জন্য ব্রিজগুলো বেশি পরিমানে ব্যবহৃত হয়। ভূমধ্যসাগরীয় ঔপনিবেশিকদের মাধ্যমে ১২৩০ সালের দিকে শহরটি গড়ে ওঠে।

আর গাড়ি নেই বলেই নেই কোনো কালো ধোঁয়ার ঝামেলা কিংবা হর্নের বিকট শব্দ। যদি নৌকায় চড়তে ভালো না লাগে তাহলে একটি সরু গলিপথ আছে শহরটিতে। সে পথে সাইকেল চালিয়ে কিংবা হেঁটে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যাতায়াত করা যায়। শহরটির পোস্টম্যানও একটি ছোট নৌকায় করে এবাড়ি ওবাড়িতে চিঠি বিলি করেন।

সৌন্দর্য ও রোমান্টিকতার জন্য শহরটিকে ‘ডাচ ভেনিস’ বলা হয়ে থাকে। ২৬০০ জনসংখ্যার এই শহরটি কিছুদিন আগেও একটি গ্রাম ছিল। কিন্তু পর্যটন খাতে এই ছোট্ট গ্রামটির অংশগ্রহণের কারণে গ্রামটিকে ছোট্ট শহরের মর্যাদা দেয় কর্তৃপক্ষ।

জলপথের শহর বলেই প্রতিবছর গেইথর্নে অনেক পর্যটক বেড়াতে আসেন। ১৯৫৮ সালে ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা বার্ট হ্যান্সট্রা তাঁর বিখ্যাত হাসির ছবি ফানফেয়ার শুটিংয়ের জন্য গেইথর্নকে বেছে নিয়েছিলেন। এর পরই মূলত প্রচারের আলোয় এসেছিল তখনকার ছোট্ট গ্রামটি। পর্যটকরা শহরটিকে ভেসিন অব নর্থ কিংবা ভেনিস অব নেদারল্যান্ডস নামে ডাকতে ভালোবাসেন।

গেইথর্ন গ্রামের বাসিন্দা রোজেন বলেন, ‘আমরা আমাদের গ্রামকে খুবই ভালোবাসি। রাস্তা নেই বলে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। বরং আমরা এই ব্যাপারটাকে উপভোগ করি।

খালের পানি কীভাবে এতটা পরিষ্কার থাকে; এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের গ্রামের ছেলেবুড়ো সবাই যথেষ্ট সচেতন। আমরা এই পানিতে কোনো কিছু পরিষ্কার করি না। গোসল করাও একেবারেই নিষেধ। যন্ত্রচালিত নৌকা থেকে তেল নিঃসরণ হয় তাই ওই নৌকা আমাদের এখানে নিষিদ্ধ।’

শহরটি বিশাল প্রাকৃতিক সংরক্ষণশালা উইরিবেন উইডেন ন্যাশনাল পার্কের মাঝ বরাবর অবস্থিত। স্থানীয় ছোট জনসংখ্যা ও কম পর্যটক গিথুর্ন শহরকে চিত্রানুগ করেছে। শহরের চারপাশের নিদ্রালু খাল পর্যটকদেরকে স্মৃতিকাতর করে তোলে।

অবশ্যই গ্রীষ্মকালে শহরটি বেড়ানোর জন্য জনপ্রিয় জায়গা। তবে শীতকালেও এটি সমান জনপ্রিয় কারণ সেসময় পর্যটকরা স্থানীয় খাল ও হৃদগুলোতে আইস স্কেটিং করতে পারে। পর্যটকরা এখানে নৌকা নিয়ে ঘুরতে পারেন, শহরের ইতিহাস ঐতিহ্য জানার জন্য জাদুঘর পরিদর্শন, চিত্র প্রদর্শনীতে যেতে পারেন।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com