বোরোয় বাম্পার ফলন
প্রকাশের সময় : 2019-05-23 20:02:18 | প্রকাশক : Administration
মাঠের পর মাঠ বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধান। মাঠে সোনালি ধান আর কৃষকের হাসিমাখা মুখ জানিয়ে দিচ্ছে বোরোর বাম্পার ফলনের সুখবর। বোরো ধানের গন্ধে ভরপুর সর্বত্রই। কৃষকরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। কেউ সেই ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠানে, মাড়াই করে বস্তাবন্দী করছেন। আবহাওয়া ভাল থাকায় শহরের আশপাশের কৃষি জমি থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকালয় সর্বত্রই সবাই মেতেছেন ধান কাটা উৎসবে। কৃষকের মাঠ ভরে গেছে বোরোর বাম্পার ফলনে। সেই ফলন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সবাই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছে এবার বোরো ধান। ফলনও হয়েছে বেশ। মাঠের ৯০ শতাংশেরও বেশি ধান পেকে গেছে। গরমে নগরবাসীর যেখানে হাঁসফাঁস অবস্থা সেখানে মাঠের সোনা ফলানো মানুষগুলো চান আর কয়েকটা দিন থাকুক এমন রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়িয়ে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত চাষীরা। তাইতো বৈশাখের তীব্র গরমে আকাশে মেঘ দেখলেই কালো হয়ে আসে চাষীর মুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) তথ্যানুযায়ী, এবার বোরো আবাদের জন্য জমির পরিমাণ ধরা হয় ৪৮ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৪৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশি জমিতে প্রায় ৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো ধান। এছাড়াও গত অর্থবছরেও নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছিল।
আর এ বছর সরকার বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এক কোটি ৯৬ লাখ ২৩ হাজার টন। সরেজমিন উইংয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে যে ফলন দেখেছি এবং যে খবর পাচ্ছি আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলন পাব। এবার বোরো উৎপাদনের আবহাওয়াটা খুবই ভাল ছিল। না একটু কম, না একটু বেশি। সব দিক থেকে এমন পারফেক্ট আবহাওয়া পাওয়া যায় না। এবার খুবই ভালো ছিল। আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে যেখান থেকে ১ কোটি ৯৬ লাখ টন চাল সংগ্রহ হবে।
উৎপাদন নিয়ে এক প্রশ্নে সচিব বলেন, সরকারের নানামুখী উদ্যোগ রয়েছে এই উৎপাদন বৃদ্ধির পেছনে। আমরা নতুন জাতগুলোকে তিন বছরের মধ্যে একটি কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে মাঠে নিয়ে যাচ্ছি। এতে করে কৃষকরা চাষাবাদের মাধ্যমে ভাল ফলন পাচ্ছেন।
সারা দেশে তীব্র দাবদাহের মধ্যে যেখানে নগরের মানুষ ভ্যাপসা গরমে ঘরের মধ্যেই হাঁসফাঁস করছেন সেখানে গ্রামের দৃশ্য উল্টো। গ্রামের মানুষ ঘরে নেই। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ সবাই দাবদাহ উপেক্ষা করে বোরো ধান ঘরে তুলতে মাঠে কাজ করছেন। দিন-রাত সমানতালে কাজ চলছে। শহরের মানুষ বৃষ্টির জন্য বার বার আকাশ পানে তাকায় আর কৃষকরা সেখানে বলছেন আর কয়েকটা দিন থাকুক এই অবস্থা। আর কয়েকটি দিন এমন রৌদ্রোজ্জ্বল থাকলে ফলন ঘরে উঠানো যাবে বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, উত্তরাঞ্চলে গরম কিছুটা কমেছে, দক্ষিণাঞ্চলে কমেনি। বৃষ্টি কিছু কিছু জায়গায় অল্প করে হলেও হচ্ছে। মে মাসে একটি নিম্নচাপ আছে। যা ইতোমধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ফলে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আছে। মে মাসের মাঝামাঝির দিকে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ। - ওয়াজেদ হীরা, জনকণ্ঠ