জয়ের পথে পদ্মা

প্রকাশের সময় : 2019-08-07 15:20:07 | প্রকাশক : Administration
জয়ের পথে পদ্মা

সিমেক ডেস্কঃ পদ্মা এখন জয়ের দ্বার প্রান্তে। পাইল বসানো আর বাকি নেই। পদ্মা সেতুর ২৯৪ পাইলই বসে গেছে। সেতুর ভিত তৈরি করার (পাইল) সবচেয়ে কঠিন কাজ সম্পন্ন হওয়ায় প্রকল্প এলাকায় এখন আনন্দের ঢেউ। এই আনন্দ শুধু দেশী-বিদেশী প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের মাঝেই নয়। আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে পদ্মার দু’তীরসহ সর্বত্র। পাইল স্থাপনের ধিরিম ধিরিম শব্দ আর শোনা যাবে না। এই অঞ্চলের মানুষ এই শব্দের সঙ্গে ছিলেন খুব বেশি পরিচিত। এই পাইল স্থাপনের শব্দ অনেকদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ত। আর বেশির ভাগ পাইলই স্থাপন হতো রাতের বেলায়। রাতের নীরবতা ভেঙ্গে সেই শব্দ আরও বহুদূর ছড়িয়ে যেত।

নদীর গভীর তলদেশে নরম মাটির স্তর। কিন্তু পাইল বসাতে গিয়েই দেখা দেয় বিপত্তি। তাই পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর পরপরই মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে সরানো হয় শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে। এরপর ধীরগতিতে পদ্মা সেতুর কাজ চলতে থাকলেও প্রায় অর্ধেকের বেশি পিয়ারের (খুঁটি) নক্সা চূড়ান্ত করা যাচ্ছিল না। গত বছরের শেষ দিকে নক্সা পুনর্বিন্যাস করার পর দ্রুতগতিতে প্রমত্তা পদ্মার বুকে বসতে থাকে একের পর এক পাইল।

এক প্রকৌশলী জানান, নতুন নক্সা চূড়ান্ত করার পর মূল সেতুর নির্মাতা চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কো¤পানিকে পাইল বসানোর কাজ শেষ করতে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। নক্সা রি-ডিজাইনের পর এবারই প্রথম নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পাইল বসানোর কাজ স¤পন্ন হলো। নক্সা জটিলতার কারণে এর আগে পদ্মা সেতুর কোন কাজই সময়মতো স¤পন্ন করা সম্ভব হয়নি।

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মাওয়া থেকে শুরু হয় পদ্মার সেতুর নির্মাণ কাজ। হ্যামার দিয়ে পাইল বসাতে গিয়ে ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারের কাজে সমস্যা দেখা যায়। এ কারণে ১৪টি পিয়ারের নক্সা চূড়ান্ত করা যাচ্ছিল না। সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই (সিওডব্লিউআই) ইউকে লিমিটেড। কাউই ইউকের বিশেষজ্ঞরা মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকটি বিদেশী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের কয়েক দফা বৈঠক হয়।

কাদামাটির পরই শক্ত মাটি না পাওয়ায় পদ্মা সেতুর ২২টি পিয়ারে একটি করে পাইলের সংখ্যা বাড়ানো হয়। এসব খুঁটিতে ছয়টি পাইল অন্যান্য পিয়ারের মতোই রেকিং বা কিছুটা বাঁকা করে বসানো হবে। এই ছয়টি পাইলের মধ্যে ৭ নম্বর পাইল ভার্টিক্যাল বা সরাসরি সোজাভাবে বসানো হয়। ৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যানে গড়ে উঠবে পুরো পদ্মা সেতু।

৪২টি পিয়ারের মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানোর পর পদ্মা সেতুর ২ হাজার ১০০ মিটার এখন দৃশ্যমান। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মূল পদ্মাসেতুর ৮১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ। আর গোটা প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৭১ শতাংশ।

দায়িত্বশীল প্রকৌশলী জানান, পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩০টি পিলারের কাজ স¤পন্ন হয়েছে। এগুলো হলো ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২। চলতি ২০১৯ বছরের মধ্যে বাকি ১২টি খুঁটির কাজ স¤পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাই আশা করা হচ্ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com