মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি
প্রকাশের সময় : 2018-11-07 17:45:45 | প্রকাশক : Admin

সিমেক ডেস্কঃ রাজধানী শহর ঢাকার খুব অদূরেই আছে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি। অবসর বা ছুটি কাটাতে ঘুরে আসতে পারেন এখানে। বিশেষ করে যাদের পুরনো রাজবাড়ী এবং প্রাচীন স্থাপত্য দেখার নেশা তাদের জন্য এটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। শতবর্ষী এই রাজবাড়ীটির মূল ভবন এখন মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়দের কাছে যা মঠেরঘাট জমিদার বাড়ি বলেও পরিচিত। ঢাকা থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরবর্তী মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া গ্রামে অবস্থিত। ৬২ বিঘা জমির উপর অবস্থিত জমিদার বাড়ি সংলগ্ন এলাকা নিয়ে জমিদার রামরতন ব্যানার্জী এ অঞ্চলে মুড়াপাড়া জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। বেশ কয়েক ভাগেই রামরতন ব্যানার্জীর উত্তরসূরিদের দ্বারা এ জমিদার বাড়ীর সংস্কার এবং বর্ধন কাজ সম্পন্ন হয়।
প্রথম সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয় ১৮৮৯ খৃষ্টাব্দে। রামরতনের মৃত্যুর পর ছেলে প্রতাপচন্দ্র এসে পরিবার নিয়ে বসবাস করতে নতুন করে পেছনের অংশ সংস্কার করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে তার পুত্র বিজয় চন্দ্র ব্যানার্জী ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাসাদের সামনের অংশে একটি ভবন নির্মাণ ও ২টি পুকুর খনন করেন। ১৯০৯ খৃষ্টাব্দে তার দুই পুত্র জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জী ও আশুতোষ চন্দ্র ব্যানার্জী কর্তৃক প্রাসাদের দোতালার কাজ সম্পন্ন হয়।
নানাবিধ সংস্কারের পর এই দ্বিতল বাড়িটিতে এখন ৯৫ টি কক্ষ রয়েছে। মূল ভবনে প্রবেশে রয়েছে বিশাল এক ফটক। দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনের দরুন রাজবাড়ীটি সবার নজর কাড়ে। চমৎকার কারুকাজ এর মাঝে লাল আর হলুদ বর্ণ মিলেমিশে বাড়ীটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বাড়ির পাশে আছে আমবাগান।
এখানে পুরো বাড়ী সংলগ্ন জায়গায় মূল ভবনটি ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু নাচঘর, আস্তাবল, মন্দির, ভান্ডার ও কাচারি ঘর। সুদৃশ্য মন্দিরের উপরের চূড়া টি ৩০ ফুটের মতো উঁচু। মূল সড়কের পাশে আছে দুটি পুরাতন মঠও।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্যে জগদীশ চন্দ্র পরিবার নিয়ে কলকাতায় চলে যান। পরিত্যক্ত বাড়িটি এর পরের বছরই পাকিস্তান সরকার দখলে নিয়ে নেয় এবং এখানে হাসপাতাল ও কিশোরী সংশোধন কেন্দ্র গড়ে তোলে। স্বাধীনতা উত্তর সময়ে বাড়িটি বাংলাদেশ প্রতœতাত্ত্বিক অধিদপ্তর নিজেদের মালিকানায় নিয়ে নেয়। এখানে ১৯৯৫ সালে একটি প্রশাসনিক ভবন গড়ে তোলা হয়। প্রথমে এটি মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীতে একে মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রূপদান করা হয়।
যেকোন স্থান হতে রাজধানীর গুলিস্তান, সায়দাবাদ বা যাত্রাবাড়ী আসবেন। এখান থেকে রূপসী বাস স্ট্যান্ড বা ভুলতায় নেমে যাবেন। ওখান হতে রিকশা বা সি এন জি তে করে জমিদার বাড়ি। নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা থাকলে আরো সুবিধে।