মেগা প্রকল্পগুলোর পূর্ণ গতি ফিরে আসছে
প্রকাশের সময় : 2020-09-17 16:40:52 | প্রকাশক : Administration

সিমেস্ক ডেস্কঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্ব। থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতিসহ উন্নয়নের চাকা। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পেও পড়েছে এর প্রভাব। ধীরগতিতে চলছে উন্নয়ন কাজ। অবশ্য গত ৩০ মে সরকার আংশিকভাবে লকডাউন তুলে উন্নয়ন কাজ ও অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
তবে প্রায় আড়াই মাসের লকডাউনে বড় প্রকল্পগুলো একেবারেই থমকে যায়। এসব প্রকল্পে কাজ করা বিদেশি শ্রমিক ও ইঞ্জিনিয়াররাও সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারেননি। তাদের নিজেদের দেশেও লকডাউন থাকায় এবং যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় সময়মতো কাজে যোগদান সম্ভব হয়নি।
তবে বাংলাদেশে ইতোমধ্যে অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে জীবনযাত্রা। অর্থনীতির সবগুলো সেক্টরকে পুরোপুরি চালু করে দেয়া হয়েছে। সরকারের প্রত্যাশা পদ্মা সেতুর মত অন্যান্য প্রকল্পও দিন-রাত কাজ করে দ্রুত এগিয়ে নেয়া। ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে দৃশ্যমান করা। আর তাই পুরোদমে অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলোর কাজও এগিয়ে নিতে চাচ্ছে সরকার।
ইতোমধ্যে মহামারিতে স্থগিত বা ধীর হয়ে যাওয়া প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে পূর্ণ গতি ফিরিয়ে আনতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পকাজে সহায়তাকারী বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সভা করছে সরকারের বিভিন্ন উইং। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গেও বৈঠকে বসছে সরকার। ইতোমধ্যে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কীভাবে দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং পিছিয়ে পরা সময় পুষিয়ে নেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে উভয় পক্ষের সঙ্গে।
বাংলাদেশের ইকোনোমিক রিলেশনস ডিভিশন (ইআরডি) ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে ভারতের বিনিয়োগে বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প রয়েছে তা বাস্তবায়নে কিভাবে গতি আনা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনায় স্থগিত বা ধীর হয়ে যাওয়া প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের পূর্ণ গতি ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থ সহায়তা দ্রুত ছাড়ে চীনা সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইআরডি। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত গতিতে বাস্তাবায়নে অর্থ ছাড়সহ সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। আগামী দিনে দু’দেশের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আঞ্চলিক রাজনীতিতে চীন-ভারতের চলমান বৈরিতায় সা¤প্রতিক সময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। চীন এই সময়ে যদি দ্রুত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না করে তাহলে তারা অনেকটা পিছিয়ে যাবে। প্রতিযোগী ভারত সেই সুযোগ নিবে। তবে চীন বাংলাদেশকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাশে পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না। তাই নিজেদের স্বার্থেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত অর্থছাড়সহ অন্যান্য সহযোগীতা অব্যাহত রাখবে। যদিও এ হিসেব কষেই গত কয়েক বছর ধরে চীন বাংলাদেশে করছে মেগা বিনিয়োগ। দেশটি এখানে পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি সর্বাধুনিক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, করোনার কারণে উন্নয়নকাজে কিছুটা গতি কমেছে- এটা ঠিক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, করোনা থাকবে, অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে উন্নয়ন কাজ যাতে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সবাই মিলে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উন্নয়ন কাজের গতি আগের মতো স্বাভাবিক করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।