ব্রিটিশ আইল্যান্ডের সিলেটি গর্ভনর!
প্রকাশের সময় : 2018-06-10 10:57:45 | প্রকাশক : Admin

সিমেক ডেস্কঃ ২৬ শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ব্রিটেনের কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশের কৃতি সন্তান, ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরী। এদিন তাকে রাজকীয় অভ্যর্থনায় বরণ করে নেয় দ্বীপবাসী।
গত বছর যুক্তরাজ্যের ওভারসিজ টেরিটরি কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। তিনি কেবল প্রথম বাংলাদেশিই নন, প্রথম এশিয়ান হিসেবেই কোনো ব্রিটিশ নাগরিক যিনি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত কোনো আইল্যান্ডের প্রধান বা গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পেলেন। প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী, গভর্নর এ দ্বীপের প্রধান। ব্রিটেন থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মাইল দূরত্বে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বা গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয় হোয়াইট হল থেকে। আনোয়ার চৌধুরীকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বলা হয়, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্নর হেলেন কিল প্যাট্রিকের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি।
সেই মোতাবেক ২৬ শে মার্চ কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে শপথ নেন তিনি। এদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় কেইম্যানের রাজধানী জর্জ টাউনের ডাউন টাউনে কেইম্যানের আইন প্রণয়ণের ক্ষমতাবিশিষ্ট সংসদ ভবনে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
শপথ গ্রহণের জন্য কেইম্যানের ওয়েন রবার্টস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে আনোয়ার চৌধুরীকে গার্ড অব অনার প্রদর্শন করে রয়েল পুলিশ সার্ভিস, যার নেতৃত্বে ছিলেন পুলিশ কমিশনার ডেরেক ব্রাইন। এসময় ডেপুটি গভর্নর, সংসদের স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা, এমপিসহ আইল্যান্ডের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্লেন থেকে নামার সময়ে আনোয়ার চৌধুরীর কোলে ছিলো তার তিনমাস বয়সি মেয়ে এমিলিয়া। এছাড়া হাত ধরে ছিলেন স্ত্রী মোমিনা চৌধুরী, পিছনে ছিলেন দুই মেয়ে আমানি এবং আব্রিনি। সোমবার শপথ গ্রহণ শেষে প্রথম ভাষণে গভর্নর আনোয়ার চৌধুরী বলেন, আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত। আমি এখানে এসেছি আপনাদের সেবার জন্য।
গভর্নর হিসেবে আনোয়ার চৌধুরী তার প্রধান চারটি অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে, আইল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সুরক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিত এবং ইউকের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখা।
সিলেটের কৃতি সন্তান আনোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশে ব্রিটেনের হাইকমিশনার ছিলেন। ওখান থেকে ২০০৮ সালে ফিরে এসে আনোয়ার চৌধুরী ২০১১ সাল পর্যন্ত ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ওই দপ্তরের আরও কয়েকটি পদে কাজ করেন তিনি। ২০১৩ সালে তাকে রাষ্ট্রদূত করে পেরুতে পাঠানো হয়। গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আনোয়ার চৌধুরী যে কেইমেন আইল্যান্ডের নেতৃত্ব দেবেন তার আয়তন মাত্র ২৬৪ বর্গ কিলোমিটার। এর রাজধানী জর্জটাউন; লোকসংখ্যা ৬০ হাজার।
প্রশাসনিককাঠামো অনুযায়ী, গভর্নর এ দ্বীপের প্রধান। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শে রাণী গভর্নর নিয়োগ দেন। আর গভর্নর দ্বীপের প্রশাসন চালাতে নিয়োগ দেন একজন প্রিমিয়ার ও একটি কেবিনেট। বিশ্বের অন্যতম ফাইনানশিয়াল সেন্টার হিসেবে পরিচিত কেইম্যান আইল্যান্ডের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত হয় ব্যাংকিং, হেজ ফান্ড, বিনিয়োগ এবং ক্যাপ্টিভ ইন্সুরেন্স ও সাধারণ কর্পোরেট কার্যক্রম ঘিরে। কেইম্যান আইল্যান্ড হলো বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ব্যাংকিং সেন্টার যেখানে ২৭৯টি ব্যাংক রয়েছে এবং এর মধ্যে ২৬০টি আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের জন্য অনুমোদিত।