বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশে যেভাবে
প্রকাশের সময় : 2020-10-14 15:17:21 | প্রকাশক : Administration

সিমেক ডেস্কঃ আজ থেকে প্রায় ৬ দশক আগে ১৯১০ সালে ভারতের এক জনবিরল অঞ্চল মেওয়াত থেকে হাতে গোনা ক’জন মানুষ নিয়ে হজরত মাওলানা ইলিয়াছ কান্ধলভী (রহঃ) তাবলিগের দাওয়াতে মেহনত শুরু করেন। তাবলিগের এ মেহনত এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। হজরত ইলিয়াছ (রহঃ) ১৩৫১ হিজরি সালে হজ্ব থেকে ফিরে আসার পর সাধারণ মুসলমানদের দুনিয়া ও সংসারের ঝামেলা থেকে মুক্ত করে ছোট ছোট দলবদ্ধ করে মসজিদের ধর্মীয় পরিবেশে অল্প সময়ের জন্য দ্বীনি শিক্ষা দিতে থাকেন।
এরই মাঝে একদা তিনি মহানবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখেন এবং মহানবী (সাঃ) তাকে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজের জন্য নির্দেশ দেন। মহানবীর (সাঃ) এর নির্দেশ দেন। মহানবীর (সাঃ) এর নির্দেশ মোতাবেক তিনি দাওয়াত ও তাবলিগের কাজের সূচনা করেন। তারপর এ কাজকে আরও বেগবান ও গতিশীল করার জন্য এ উপমহাদেশের সর্বস্তরের আলেম-ওলামা, পীর- মাশায়েখ ও বুজর্গদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করা হয় এবং দিল্লীর কাছে মেওয়াতে সর্বস্তরের মুসলমানদের জন্য ইজতেমা বা সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়।
এরপরই ক্রমেই তাবলিগের কার্যক্রম বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের গন্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় বিশ্বের সর্বত্র। হজরত মাওলানা আবদুল আজিজ (রহঃ) এর মাধ্যমে ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে তাবলিগ শুরু হয়। তারপর ১৯৪৬ সালে বিশ্ব ইজতেমা সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের তাবলিগের মারকাজ কাকরাইল মসজিদে। পরে ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রাম হাজী ক্যাম্পে ইজতেমা শুরু হয়। এরপর ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে, তারপর ১৯৬৫ সালে টঙ্গীর পাগারে এবং সর্বশেষ ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর ভবেরপাড়া তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব ইজতেমা সেই থেকে এ পর্যন্ত সেখানেই ১৬০ একর জায়গায় তাবলিগের সর্ববৃহৎ ইজতেমা বা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। উল্লেখ্য, তাবলিগ জামায়াতের সদর দফতর দিল্লীতে থাকা সত্ত্বেও এর বার্ষিক সমাবেশের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নেয়া হয়। কথিত আছে, তাবলিগ জামায়াতের মুরুব্বিদের বৈঠকে ইজতেমার স্থান নির্ধারণের জন্য নাকি লটারি হয়েছিল। সেই লটারিতে বাংলাদেশের নাম ওঠে। আর সেই থেকেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ এ বিশ্ব ইজতেমা।
বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে এই সমাবেশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা হয়। পুরো সমাবেশের আয়োজনই করে থাকেন একঝাঁক ধর্মপ্রাণ মুসলমান স্বেচ্ছাসেবক আর্থিক, শারীরিক সহায়তা দিয়ে প্রথম থেকে শেষাবধি তারা এই সমাবেশকে সফল করতে সচেষ্ট থাকেন।
