দৃশ্যমান হচ্ছে শাহ্জালালের তৃতীয় টার্মিনাল
প্রকাশের সময় : 2021-05-05 14:09:06 | প্রকাশক : Administration

আল-আমিন: মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যেও হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ১৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হওয়ার পথে রয়েছে দেশের বৃহত্তম বিমান বন্দরটির তৃতীয় টার্মিনাল। গত বছরের মার্চে দেশে করোনা ভাইরাসের ছোবল পড়ার পর টার্মিনালের কাজের গতি কমে যায়।
সেখানকার একাধিক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়। পরে কিছু শ্রমিক কাজ ফেলে বাড়ি চলে যায়। পরে শ্রমিকরা আবার কাজে যোগ দেয়। তখন থেকে টার্মিনালের কাজ চলমান। এর মধ্যে একাধিকবার সরকার কর্তৃক লকডাউন দিলেও টার্মিনালের কাজে ধীর গতি হয়নি। তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে।
টার্মিনালের ডিজাইনগত মান বৃদ্ধির জন্য নির্মাণকাজ শেষ হতে আরো ৩ মাস বাড়তে পারে। মিতসুবিশি করপোরেশন, ফুজিতা করপোরেশন ও স্যামসাং যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজটি করছেন। প্রকল্পে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ১২০০ শ্রমিক। এই কাজ শেষ হলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যাত্রী সেবার মান আরো উন্নত হবে। এতে করে বছরে উন্নত সেবা দেয়া যাবে আরো ২০ লাখ যাত্রীকে।
পাশাপাশি আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাত। তৃতীয় টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। সিঙ্গাপুরের চ্যাংগি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল ৩, চীনের গুয়াংজুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এবং ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের মতো স্থাপনার নকশাকার তিনি।
এ ছাড়াও মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমান বন্দরের সঙ্গে সংশ্লি−ষ্ট বিভিন্ন প্রকল্পের নকশা করেছেন এই বিখ্যাত স্থপতি। তৃতীয় এই টার্মিনালে থাকছে ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে ৩৭টি বিমানপার্ক করার জায়গা, ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখার সুবিধা, ৬৩ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্সও ১১৫টি চেকইন কাউন্টার।
এ ছাড়াও থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন ও বহুতল কার পার্ক। তিনতলা এই টার্মিনাল ভবনটি স্থাপত্য রীতিতেও অনন্য। নান্দনিক নকশায় এর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। কেবল টার্মিনাল ভবন নয়, ভবনের বহির্বিভাগেও থাকবে এমন নকশার ছাপ। হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৪শে অক্টোবর অনুমোদন পায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে।
শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। সব মিলে এখন প্রকল্পটির খরচ ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের সংস্থা জাইকা। - মানবজমিন
