অর্থনীতির বড় স্বস্তি প্রবাসী আয়ে
প্রকাশের সময় : 2021-08-12 14:31:41 | প্রকাশক : Administration

করোনার মধ্যেও প্রবাসীরা হাত খুলে দেশে ডলার পাঠিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে। সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ শতাংশ।
প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের ওপর ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত নতুন উচ্চতায় উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ পৌঁছেছে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। এর আগে গত মে মাসের শুরুতে রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। করোনার বছরে ২ লাখ কোটি টাকা পাঠালেন প্রবাসীরা। এর ফলে দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। এ সময়ে গ্রামাঞ্চলের অনেক পরিবারে করোনার এ দুর্যোগকালে স্বস্তি ও সাহস জুগিয়েছে প্রবাসী আয়ের অর্থ। বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসাকে উৎসাহিত করতে কোনো কোনো ব্যাংক নিজেরা সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার দেশে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা দেয়। এর পর থেকেই বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বাড়তে শুরু করে। অন্যদিকে অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো কমে যায়। করোনার মধ্যে প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের ধাক্কা লাগার আশঙ্কা করা হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টোটি। আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়ায় বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে।
প্রবাসীরা চলতি জুন মাসে দেশে মোট ১৯৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন। আর চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। এর আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮০৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। আবার বিশ্বজুড়ে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে প্রবাসী আয় অর্জনে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
এর ফলে নতুন উচ্চতায় উঠেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। অর্থ বছর জুড়ে করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতির নানা অস্বস্তির মধ্যে স্বস্তি দিয়েছে প্রবাসী আয়। গত অর্থবছরের তুলনায় এই অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রবাসী আয়ে বাংলাদেশের স্থান এখন সপ্তম। করোনার মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আসা প্রবাসী আয় কিছুটা কমলেও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে বেড়েছে। কোভিডের শুরু থেকেই আশঙ্কা ছিল যে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে ধ্বস নামবে।
কিন্তু সব আশঙ্কা দূর করে ২০২০ সালে বাংলাদেশ ২২ বিলিয়ন বা ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (১ ডলার= ৮৪ ডলার) রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পেয়েছে। তাতে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ছিল অষ্টম স্থানে, ২০২০ সালে উঠে এলো সপ্তম স্থানে।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালের তুলনায় প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২০ সালে হজ্ব না হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের অনেক শ্রমিক জমানো টাকা দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের প্রবাসী আয় বৃদ্ধির পেছনে এটি বড় কারণ। এ ছাড়া গত বছর বন্যার কারণেও অনেক প্রবাসী শ্রমিক অতিরিক্ত টাকা পাঠিয়েছেন। - সূত্র: অনলাইন
