প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ‘স্থায়ী ঠিকানা’

প্রকাশের সময় : 2021-09-08 11:36:49 | প্রকাশক : Administration
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ‘স্থায়ী ঠিকানা’

আলম ফরাজী: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের মাঝে ঘর উপহার দেওয়া শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দফায় সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে দুই শতক জায়গাসহ মাথা গোঁজার জন্য একটি করে পাকা ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে যেন খুশির অন্ত নেই ঠিকানা পাওয়া মানুষগুলোর।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রাজিবপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল লাটিয়ামারিচরের ওই প্রকল্পের একটি স্থান ঘুরে দেখতে গেলে কথা হয় নতুন ঠিকানা পাওয়া মানুষদের সঙ্গে। এখানে ১৫টি পরিবার পাচ্ছেন নতুন ঠিকানা। তাদের মধ্যে ১৪টি পরিবারই মুচি পরিবার। এই পরিবারগুলোর তিন যুবক সদ্য বিয়ে করে অপেক্ষায় আছেন নতুন ঠিকানায় প্রবেশ করাবেন নতুন অতিথিদের।

ঘর বরাদ্দ পাওয়া বেলী রাণী রাবী দাস (৫৫) কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তিনি অতি আগ্রহভরে কাছে এসে রাজ্যের হাসি শুরু করেন। যে জগদ্দল পাথর এতোদিন বুকে চেপে ছিল তা এখন সরে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমরার ঠিকানা ছিল না মানে কিছুই ছিল না। নাই ঠিকানা নিয়ে নাই মানুষ ছিলাম। আর সেই নাই ঠিকানা থাইক্যা অহন একটা স্থায়ী ঠিকানা হইছে। এইডা করছুইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঠিকানা পাইয়্যা অহন আমরার পুরো পরিবারের ভবিষ্যত শুরু হইছে।

বেলী রাণী বলেন, ‘আমার তিনটা মেয়ে আছে। আগে বালুচরে থাকতাম। বিভিন্ন শঙ্কা নিয়ে বসবাস করতাম, স্বপ্ন দেখতাম কবে নিজের একটা জায়গা ও ঘর হবে। সেই স্বপ্ন যে পাকা ঘরে পরিণত হবে তা কখনও ভাবিনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি তিনি আমার মেয়েদের জন্য একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন।’

সদ্য বিয়ে করেছেন জিতেন্দ্র, যতন ও সুনীল রবী দাস। তাদের বাবাদের পক্ষে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। এখন অপেক্ষায় আছেন ডাক ঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠান করে নববধূদের নতুন ঠিকানায় প্রবেশ করাবেন। সেই সঙ্গে পরবর্তীতে নিজেদেরও নতুন ঠিকানা হবে। জিতেন্দ্র জানান, তিনি বিয়ে করেছেন একমাসও হয়নি। পাকা ঘর ও নিজের একটি জায়গা পাচ্ছেন এই আশায় স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। নববধূরও নিজেদের কোনো জায়গা জমি নেই। তাই এখন স্ত্রীকে নতুন ঠিকানায় আনতে দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছেন।

যতন রবী দাস জানান, তিনি ২২ দিন আগে বিয়ে করেছেন। নিজের একটি পাকা ঘর ও জায়গা হচ্ছে শুনে কনের পরিবার বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন। তা না হলে হয়তো এই পরিবারে বিয়ে করা সম্ভব হতো না। জিতেন্দ্র’র কাছ থেকে তার নতুন স্ত্রী দিপালী রানী রবি দাসের মোবাইল নাম্বার নিয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি আমাকে উনার (স্বামী) নতুন ঠিকানায় ওঠানো  হবে। এর আগে উনাদের কোনো জমি বা ঘর ছিল না। এটা আমাদেরও নেই। আমি এখন স্বামীর পাকাপোক্ত জায়গার পাকা ঘরে গিয়ে নতুন স্বপ্ন বুনন করতে পারবো।’

একষট্টি নাম্বার ঘরের বরাদ্দ পেয়েছেন দ্বীনেশ রবী দাস। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। তিনি জানান, এক মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিতে পারলেও একটি ঠিকানার কারণে পড়ালেখা করা অন্য দুই মেয়েকে একটি ঠিকানার অভাবে ভালো জায়গায় বিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন আটকে ছিল। এখন নতুন ঘর পাওয়ায় সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে।

ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে গীতা রাণী রবি দাস। নতুন পাকা ঘর পেয়ে চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক খেলা করছে তার। কথা বলার সময় হাসি লেগেই আছে গীতার মুখে। গীতা বলে, আগে চরের পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরে মা-বাবা ও ভাইবোনদের নিয়ে খুবই কষ্টে থাকতাম। বৃষ্টির দিনে নিশ্চিন্তে ঘুমানো ছিল অতি কষ্টের। এখন শেখ হাসিনার দেয়া পাকা ঘরে থাকবো। আগের ভয় এখন আর নাই।

৬০ বছর বয়সী কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, অনেক রোগে ভুগছি। জীবনটা পার করেছি পরের জায়গায়। স্বপ্নেও ভাবিনি নিজের একটা জায়গা ও ঘর হবে। আগে যে ঘরে থাকতাম বৃষ্টি হলেই রাতে চৌকির ওপর বসে থাকতাম। সাধ্যের ভিতরে নেই বলে এমন ঘরের স্বপ্ন দেখিনি কখনো। প্রধানমন্ত্রী দেওয়ায় আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের ঘর তৈরি করে তাতে সহায় সম্বলহীনদের উঠিয়ে দিতে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছি। তাদের পাকা ঘরে বসবাস দেখতে যে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি তা তুলনা হয় না। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে আরও খাসজমিতে ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের ঘর দেওয়া হবে। - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৯১২৫২২০১৭, ৮৮০-২-৭৯১২৯২১
Email: simecnews@gmail.com