বিপ্লব ঘটাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

প্রকাশের সময় : 2022-08-03 16:03:01 | প্রকাশক : Administration
বিপ্লব ঘটাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট উৎপাদনে যেতে পারে এজন্য চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। সংশ্লিষ্টদের আশা, দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের পর এই প্রকল্প সরকারকে দ্বিগুণের বেশি অভ্যন্তরীণ রিটার্ন দেবে। ১,২০০ মেগাওয়াটের দুটি মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হবে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা।

রাশিয়ার ৯০ শতাংশ ঋণ এবং ১০ শতাংশ ব্যয় করবে বাংলাদেশ সরকার। উৎপাদনে গেলে রাশিয়াকে প্রতি বছর ঋণ শোধ করতে হবে ৫৬৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৫৬ কোটি ডলার। এই বিপুল অঙ্ক দেখে কেউ কেউ এটিকে সাদা হাতির প্রকল্প বলে বিরূপ মন্তব্য করছেন। কিন্তু ‘সরকারের সংশ্লিষ্টরা এমন অভিযোগ নাকচ করে বলছেন, এটা শ্বেত হস্তীর প্রকল্প নয়, বরং উন্নয়নের মাইলফলক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্পের দুটি রিয়্যাক্টর চালুর পর প্রতি বছর কিস্তি পরিশোধ করতে হবে (৫৬ কোটি ডলার)। প্রকল্পের রিটার্ন থেকে কিস্তির অর্থ উঠে এলে ভর্তুকির দরকার পড়বে না। প্রতি বছর অভ্যন্তরীণভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে রিটার্ন আসবে সাড়ে ৯ শতাংশ। প্রকল্প ঋণের সুদ ১ থেকে ২ শতাংশের বেশি হবে না। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ এই প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক লাভবান হবে।

প্রকল্পের দুটি রিয়্যাক্টর থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট, যা ২৪ লাখ কিলোওয়াট বা ইউনিটের সমান। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ যদি ৫ টাকায় বিক্রি হয়, তাহলে প্রতি ঘণ্টায় আয় হবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় হিসেবে দৈনিক আয় আসবে ২৮ কোটি ৮০ লাখ। বছরে ১০ হাজার ৫১২ কোটি আয় হবে। যদি ডলারে হিসেব করা হয়, তাহলে বার্ষিক আয় দাঁড়াবে ১ হাজার ২৩৬ মিলিয়ন ডলার, যেখানে ঋণ শোধ লাগবে মাত্র ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার।

অপরদিকে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি ব্যয় হবে সাড়ে ৪ থেকে ১১ দশমিক ২ মার্কিন ডলার এবং মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন ব্যয় হবে প্রতি মেগাওয়াটে ৮ থেকে ১৪ ডলার। দুই ব্যয় মিলিয়ে প্রতি মেগাওয়াটে গড় খরচ হবে ১৬ থেকে ১৮ ডলার। এর বেশি হবে না। ভিভিইআর-১২০০ সবচেয়ে আধুনিক রিঅ্যাক্টর এবং রাশিয়ান জ্বালানির তুলনামূলক অনেক কম।

প্রতি মেগাওয়াট ১৮ ডলার হিসাবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটে ঘণ্টায় খরচ হবে ৩৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এক বছরে খরচ হবে ৩৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন না হয়ে যদি ৯০ শতাংশও উৎপাদন হয়, তাহলে ব্যয় কমে দাঁড়াবে ৩৪০ মিলিয়ন ডলারে। পাশাপাশি আয়ও কমে ১ হাজার ১১২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে।

এই হিসাবে বছরে প্রকল্প থেকে মোট আয় হবে ১ হাজার ১১২ ডলার এবং ব্যয় হবে ৩৪০ মিলিয়ন ডলার। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে বছরে প্রকল্প থেকে ৭৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্বৃত্ত আয় থাকবে । প্রতি বছর কমপক্ষে ৭৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লাভ হলে ৫৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কেন পরিশোধ করতে পারবে না এই প্রকল্প? এভাবে ২০ বছরে কিস্তি পরিশোধের পরও প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ডলার লাভ হবে।

এই ১২ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প থেকে ৬০ বছরে রিটার্ন আসবে ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া ৬০ বছর পরও রিয়্যাক্টর আপগ্রেড করে চালানো যাবে। প্রকল্পটির কারণে যে দীর্ঘমেয়াদি পাওয়ার সোর্স পাওয়া যাবে, তাতে যেমন টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমদানি নির্ভর জ্বালানি থেকে তৈরি বিদ্যুতের অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচা যাবে, তেমনি এ প্রকল্প ঘিরে যে বড় আকারের দক্ষ জনশক্তি তৈরি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ খুলছে, সেটাও সুদূরপ্রসারী ফল দেবে। - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৯১২৫২২০১৭, ৮৮০-২-৭৯১২৯২১
Email: simecnews@gmail.com