যা আছে, তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন

প্রকাশের সময় : 2022-09-15 12:02:25 | প্রকাশক : Administration
যা আছে, তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন

রিয়াজুল হক: একদা এক রাজা তার উজিরকে প্রশ্ন করলেন, দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষ অসুখী কেন? এই যে দেখো, আমার কর্তৃত্বে এতোবড় রাজ্য! কোন কিছুর অভাব নেই। তবুও আমি মনের দিক থেকে সেই শান্তিটা পাই না। সবসময় অশান্তিতে কেন থাকি? উজির কিছুক্ষণ নীরব থেকে উত্তর দিলেন, এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনাকে ছোট একটি কাজ করতে হবে। রাজা জানতে চাইলেন, কি কাজ?

উজির বললেন, আপনি একটি থলেতে নিরানব্বইটি দিনার রাখুন। আর থলেটির উপর লিখে দিন একশত দিনার। এরপর রাত্রিতে সেটা আপনার খাদেমের ঘরের সামনে ফেলে রাখুন। উজিরের পরামর্শ মোতাবেক, রাজা সেটাই করলেন। রাতে সেই খাদেম বের হলো এবং ঘরের সামনে একটি থলে পড়ে থাকতে দেখল।

খাদেম থলেটি ঘরে নিয়ে গেল। গুনে নিরানব্বইটি চকচকে দিনার পেল কিন্তু পরক্ষণেই লক্ষ্য করল, সেই থলের উপরে লেখা আছে ‘একশত দিনার’। এক দিনার না পেয়ে বেচারা ঘরের সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে ওই একটি দিনার খুঁজতে লাগিয়ে দিল। সারারাত চলল খোঁজাখুজি। কিন্তু পাওয়া গেল না।

এদিকে রাজা আর উজির আড়ালে দাঁড়িয়ে সব দেখছিলেন। সকালে সেই খাদেম রাজ দরবারে আসলো। রাজা দেখলেন, খাদেমের চেহারা মলিন, যেন বিরাট কিছু হারিয়ে যাওয়ার দুঃখে জর্জরিত খাদেমের মন। এবার উজির রাজাকে বলল, মহারাজ! ওই একের জন্যই আমরা এতো অসুখী। আল্লাহ আমাদেরকে যত নেয়ামত দিয়েছেন, তা হলো নিরানব্বইটি দিনারের মতো। অথচ আমরা সেগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি না।

আমাদের অনেকের মধ্যে এক ধরণের হাহাকার বিরাজ করে। আমি সাধারণত যাদের সাথে চলাফেরা করি কিংবা যাদের সাথে বিভিন্ন সময় কথাবার্তা হয়, তারা মোটামুটি সবাই সুস্থ, ভালো আয় করে, বাসস্থানের সমস্যা নাই। তারপরেও তাদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের কষ্ট দেখি। যেমন, কবে যে বাড়িটা তিন তলা থেকে চার তলা করতে পারবো?/ কবে যে প্রমোশন পাবো?/ কবে যে বাগান বাড়ি করতে পারবো?/ ড্রয়িং রুমে ১.৫টন থেকে ২টনের এসি কবে যে লাগাতো পারবো?/ খুব নিঃসঙ্গ লাগে/ খুব ডিপ্রেশনে আছি/ ব্যাংকের সুদের হার কেন যে ০.০৫% কমে গেল ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি যখন হতাশার কথা শুনি, নিজের মধ্যে হাসি পায়। নিজে নিজে ভাবি, আল্লাহর রহমতে দুটি চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি, হাত-পা সচল আছে, এখনো অসুস্থতা নেই, লেখাপড়া করতে পেরেছি, সম্মানের সাথেই সমাজে চলাচল করছি, পরিবারের মধ্যে আছি, বন্ধু-বান্ধব আছে। সবই আল্লাহর রহমত। এতো রহমতের মধ্যে বেঁচে থেকে আমাদের উচিত প্রতিনিয়ত আল্লাহকে ধন্যবাদ দেওয়া। তাকে স্মরণ করা।

একবার ভাবুন তো, দুই মিনিটের জন্য যদি অক্সিজেন বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে কি করতেন? সকল ধরণের চাওয়া পাওয়া বাদ দিয়ে শুধু বেঁচে থাকতেই চাইতেন। হ্যাঁ, সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় চাওয়া হওয়া উচিত। কি পেয়েছি, আল্লাহ কত দিয়েছেন, সেই হিসাব আমরা ততটা করি না, যতটা না পাওয়ার হিসাব করি।

ওই অপূর্ণতার দিকে মনোনিবেশ আমরা এত কঠিনভাবে করে ফেলি যে, পাওয়ার হিসাব আর মনেই থাকে না। যার কারণে সব দিক থেকে শুধু বারবার অপূর্ণতাই চোখে পড়ে। মূলত আমাদের কোন কিছুতেই সন্তুষ্টি নেই। সবসময় উপরের দিকে তাকিয়ে থাকি। একবার নিচের দিকে তাকান। একবার একজন অন্ধ মানুষের কথা ভাবুন।

যদি আপনার দুইটি চোখের বিনিময়ে একটা রাষ্ট্র লিখে দেওয়ার কথা বলা হয়, তবু আপনি রাজি হবেন না। অন্তত আমার ব্যাপারটা বলতে পারি, আমি হবো না। আমাদের যা আছে, তাই নিয়েই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত। দেখবেন খারাপ লাগবে না। ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন। আপনি একটিবার বিশ্বাস করুন, আপনি অনেক ভালো আছেন, দেখবেন, আপনি সত্যিই অনেক ভালো আছেন। - সূত্র: অনলাইন

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৯১২৫২২০১৭, ৮৮০-২-৭৯১২৯২১
Email: simecnews@gmail.com