মিথ্যা বলা যখন বৈধ!
প্রকাশের সময় : 2022-09-15 12:03:38 | প্রকাশক : Administration
আমিন মুনশি: আপনার পরিচিত দুই বন্ধুর মাঝে মনোমালিন্য চলছে। এ মুহূর্তে আপনি একজনের কাছে গিয়ে আরেকজনের ব্যাপারে পজেটিভ কথা বলবেন। যেমন: তুই তো ব্যাটা ওরে দেখতে পারোস না, অথচ ও তো তোর ব্যাপারে সবসময় ভালো কথাই বলে ইত্যাদি। অথবা পরিস্থিতিভেদে যেভাবে তাকে কনভিন্স করা যায়।
অথবা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে মিথ্যা বলার অনুমতি থেকে ভুল বোঝার কোন অবকাশ নেই। এটি মূলত কখনো কোন সম্ভাব্য বিরোধের আশঙ্কা থাকলে তখনই বলা হবে। যেমন: স্বামী রগচটা। একদিন খাবারে লবণ বেশি হলো।
স্ত্রী জানেন, স্বামী কোন অজুহাত মানবে না। তাই তিনি কোন মিথ্যার দ্বারা ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করলেন। এভাবে, ধরুন কোন স্ত্রী স্বামীকে অতিষ্ঠ করে তোলে দামী শাড়ীর জন্য। এমতাবস্থায় তিনি ৫০০ টাকা দিয়ে শাড়ি এনে বলবেন, শাড়িটা ৮০০ টাকা দিয়ে এনেছি। মূলকথা, এসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলার বৈধতার সুযোগ নেই। কারণ রাসূল সাঃ নিজেই এই কথা বলেছেন, তাঁর জীবনে এভাবে স্ত্রীদের সাথে শুধু শুধু মিথ্যা বলার কোন নজির দেখা যায় না।
আরেকটি হলো, জিহাদের ময়দানে শত্রুকে মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করা জায়েজ। রাসূল সাঃ থেকে এমনটি পাওয়া যায়। যদিও সেটি সরাসরি মিথ্যাও ছিলো না; বরং সেটি ছিলো কৌশলপূর্ণ কথা, যাকে আরবিতে ‘তাওরিয়াহ’বলা হয়। অর্থাৎ, আপনি যা বলছেন তা থেকে ডবল মিনিং নেয়া যায়। সেখানে আপনি অপরিচিত মিনিংটা ধরে কথা বললেন আর সেই ব্যক্তি কমন মিনিংটা ধরে নিলো এবং বিভ্রান্ত হলো। যেমন; ইব্রাহীম আঃ যখন তাঁর স্ত্রী সারাকে নিয়ে সফর করছিলেন তখন মিশরের কুখ্যাত শাসক সারাকে ভোগ করতে চাইলো। এমতাবস্থায় তার রীতি ছিলো, সাথে স্বামী থাকলে মেরে ফেলা। তাই ইব্রাহীম আঃ সারাকে ‘বোন’ পরিচয় দেন। মূলত তাঁরা তো দ্বীনের দিক থেকে (দ্বীনি) ভাই-বোনই ছিলেন। এটিকে বলা হয় তাওরিয়াহ। (সহিহ বুখারি: ২২১৭)
এ প্রসঙ্গে উম্মে কুলসুম রাঃ বলেন, আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, কল্যাণ লাভ করার উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি মিথ্যা কথার মাধ্যমে পরস্পরবিরোধী দুই ব্যক্তির মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে, সে মিথ্যাবাদী নয়। উম্মে কুলসুম রাঃ থেকে অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, আমি তাঁকে (রাসূল সাঃ) কেবল তিনটি ক্ষেত্রে মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে শুনেছি। তা হলো
১. যুদ্ধের ময়দানে মিথ্যা বলা।
২. দুটি লড়াইরত দলের মাঝে মিথ্যা কথার মাধ্যমে সন্ধি স্থাপন করে দেওয়া।
৩. স্ত্রীর সাথে স্বামীর কথাবার্তায় এবং স্বামীর সাথে স্ত্রীর কথাবার্তায় মিথ্যার আশ্রয় নেয়া।