শীঘ্রই দোহাজারী থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন
প্রকাশের সময় : 2019-03-13 11:54:10 | প্রকাশক : Admin

সিমেক ডেস্কঃ দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দশ প্রকল্পের অন্যতম এই প্রকল্প। সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠকেই প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে পরামর্শক নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন পেয়েছে।
জিওবি ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি আগামী (তিন বছর) ’২২ সালের মধ্যে শেষ করে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়ায় অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে দোহাজারী হয়ে রামু-কক্সবাজার ও রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দশ মেগা প্রকল্পের এই প্রকল্প দুই ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজারের রামু থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এটি নির্মাণে প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে। ডুয়েলগেজের এ লাইনটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে পাল্টে যাবে এখানকার অর্থনৈতিক চিত্র।
আমূল পরিবর্তন ঘটবে যোগাযোগ ব্যবস্থার। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দেশী-বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রেললাইনটি নির্মাণ হলে যাতায়াতের সুবিধা, বনজ ও কৃষি পণ্যসামগ্রী পরিবহনের সুযোগ তৈরি হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন শহর কক্সবাজার রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। শুধু তাই নয়, সৈকত নগরীর পর্যটন শিল্পের যেমন বিকাশ ঘটবে, তেমনি বিস্তৃত হবে সেখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যও।
প্রসঙ্গত, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত সন্নিকটে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি একনেকে অনুমোদন পায় গত ২০১০ সালের ৬ জুলাই। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের রেলপথের এই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর দেশী-বিদেশী ৩টি কোম্পানির সঙ্গে রেলপথ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করে রেলওয়ে। এ প্রকল্পের জন্য প্রায় দেড় হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটি চালু হলে অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে কক্সবাজারবাসীর সামনে।
জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারসহ মোট ১২৮ কিলোমিটার নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিমিঃ, রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিমিঃ এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিমিঃ রেলপথ নির্মাণের কথা রয়েছে। আর ১২৮ কিমিঃ রেলপথে স্টেশনের সংখ্যা থাকছে ৯টি। এগুলো হলো সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়ার সাহারবিলের রামপুর, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার, উখিয়া ও ঘুমধুম। এতে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম ৯ ও ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম থাকবে ৯। এছাড়া সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৪৩ মাইনর সেতু, ২০১ কালভার্ট, সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় একটি ফ্লাইওভার, ১৪৪ লেভেল ক্রসিং এবং রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং নির্মাণের উল্লে−খ রয়েছে প্রস্তাবিত প্রকল্পে। -সুত্রঃ জনকণ্ঠ